বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
বেজা এবং ভারতের বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর প্রতিনিধিবৃন্দের মধ্যে মতবিনিময় সভা
|
স্থান: বেজা সম্মেলন কক্ষ |
তারিখ: ২০/০২/২০২৩ |
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল সমূহে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারতের কলকাতার ব্যবসায়ী সংগঠন বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিবৃন্দ। আজ বেজা কার্যালয়ে নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তারা এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রসমূহ যাচাইয়ের জন্য এ সংগঠনের প্রায় ২০ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল ৫ দিনের সফরে বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছে। সভায় বেজার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বেজা’র সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনা করেন বেজা’র মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) জনাব মোহাম্মদ হাসান আরিফ।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থাপিতব্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমানের পন্য উৎপাদন/রপ্তানি আয় প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের প্রশ্নের আলোকে নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যগতভাবে একটি চমকপ্রদ মেলবন্ধন বিরাজমান এবং এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আরো সুসংহত করতে বেজা নিয়তই কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, বেজা দুইটি ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে কাজ করছে, যার একটি দু’দেশের সীমান্তবর্তী স্থান মোংলায় এবং অপরটি চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের মিরসরাই অংশে অবস্থিত। তিনি জানান, উক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা ছাড়াও আইনী দলিলাদি প্রস্তুতির কাজ চলমান রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, দু’দেশের সীমান্তবর্তী আরো কিছু স্থান যেমন কুষ্টিয়া, পঞ্চগড়, বগুড়া, নীলফামারীতেও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বেজা কাজ করছে। এশিয়ান পেইন্টস, ম্যারিকো, সাকাতাসহ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ভারতীয় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, সকল অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট ৩৮টি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে। এর মধ্যে সরকারী অর্থনৈতিক অঞ্চলে-৫ টি, বেসরকারী অর্থনৈতিক অঞ্চলে রয়েছে ৩৩টি। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের প্রথম পরিকল্পিত ও স্মার্ট শিল্প নগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। প্রয়োজনীয় সকল ইউটিলিটি সুবিধা নিশ্চিতের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে বেজা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শিল্প নগর স্থাপনে কাজ করছে। তিনি জানান, দাখিলকৃত বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুযায়ী এখানে মোট বিনিয়োগ হবে প্রায় ১৭.৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কলকাতার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ জুয়েলারি শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পে কর অবকাশ, বিনিয়োগের প্রকৃতি, আমদানী রপ্তানী বিধি এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এছাড়াও তারা ম্যানুফাকচারিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, জ্বালানী, বিদ্যুৎ, আইটি, দক্ষা জনবল তৈরী, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা, জাহাজশিল্প ও সেবাখাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রতিনিধিবৃন্দের প্রধান হিসেবে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ডেসিগনেট মি. গৌতম রায় বলেন, বাংলাদেশের আতিথেয়তায় তারা সবাই মুগ্ধ। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে বিনিয়োগ নিয়ে তার সংগঠনের পক্ষ থেকে যথেষ্ঠ আগ্রহ রয়েছে এবং এ বিষয়ে ফলপ্রসু আলোচনা চলবে।
উল্লেখ্য যে, সফরে সংগঠনটি ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক, তার ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ ঢাকা ও চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহের সাথে মতবিনিময় করেছে।
